গুগল আডসেন্স থেকে আয় করতে গিয়ে আমরা কয়েকটি সমস্যার সম্মুক্ষীন হয়ে থাকি। প্রথমে যে সমস্যা হয় তা হল অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভ ই করা যায় না। এ বিষয়ে গুগল আমাদের সাথে খুবই কঠোর আচরণ করছে। অতি কষ্টে না হয় অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভ করালেন $10 হবার পর তৈরি হয় আরেক ঝামেলা। $10 অ্যাকাউন্টে জমা হলে গুগল পিন সহ আপনার ঠিকানায় একটা চিঠি পাঠায়। হয়তো বলবেন চিঠি পাঠায় এটা তো ভাল কথা।
-চিঠি পাঠানো কোন সমস্যা নয়। সমস্যা হয় তখন যখন চিঠিটি আপনার হাতে না পৌঁছলে। এবার হয়তো বলবেন কি কি সমস্যা হতে পারে?
-বেশি কিছু না। অ্যাকাউন্ট ভেরিভাই না করতে বড় জোড় পেমেন্ট পাবেন না। আর কি হবে।
-ভাই আপনার মাথা কি খারাপ হইছে। পেমেন্ট না পাইলে আয় করে লাভ কি?
উপরের কথা গুলো পড়ে হয়েতো অ্যাডসেন্সধারীদের মনের মধ্যে নানা রকমের প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে। এমন কয়েকটি প্রশ্ন উল্লেখ করছি – ১. পিনের চিঠি আসতে কত সময় লাগে। ২. আমি তো এখনও পিন পাচ্ছি না। ৩. আমার পিন ইস্যু করা হয়েছে কিন্তু এখনও হাতে পেলাম না কি হবে আমার? ৪. শেষ পর্যন্ত যদি পিন না পাই তাহলে কি করতে হবে। ইত্যাদি নানান প্রশ্ন। ঠিক আছে চিন্ত করবেন না সব গুলোর উত্তরই পাবেন।
পিন নিয়ে সমস্যা আমাদের দেশেই বেশি হয়। এটা হবার পেছনে আমাদের দেশের পোস্টাল সাভির্স দায়ী। তাদের জঘণ্য সার্ভিসের কারণে সময় মত চিঠি হাতে পৌঁছায় না। গুগল অ্যাডসেন্স টীম বলে যে – চিঠি পাঠানো ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে আপনার হাতে পৌঁছবে। তবে এর সাথে সময় বিষয়ে আরেকটি কথা বলে যে- এটি আপনার লোকেশনের উপর নির্ভর করবে। এবার আলোচনা করা যাক কিভাবে গুলো থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন।
অনেক সময় ঠিকানা ভুল হলে বা বুঝতে অসুবিধা হলে চিঠি ঠিক সময়ে আপনার হাতে আসবে না। বুঝতে না পারা বিষয়টি যেটা আমার ক্ষেত্রে হয়ে। আমার স্থানীয় পোস্ট অফিস আমার লোকেশনটি ঠিক ভাবে বুঝতে পারেনি। তাই প্রথম চিঠিটি তিন মাসেও হাতে পাইনি। তবে পরবর্তীতে যত গুলি পিন জেনারেট হয়েছে সব গুলো প্রায় ৪ সপ্তাহের মধ্যেই পেয়েছি। ঠিকানা সম্পর্কিত সমস্যা এড়াতে বিস্তারিত লিখুন। পারলে রোড নং, বাড়ি নং এগুলো উল্লেখ করুন। এখন বলতে পারেন আমি তো গ্রামে থাকি। এখানে তো রোড নং, বাড়ি নং নাই। এগুলো শহরের ব্যাপার। গ্রাম হলে এভাবে উল্লেখ করতে পারেন – Village- AAAA, PostOffice- BBBBBB, শহরের নাম দিন। এভাবে তথ্যগুলো দিলে আমরা আশা করতেই পারি যে খুব কম সময়ে পিন সম্বলিত চিঠি আপনার হাতে পৌঁছবে ইনশাআল্লাহ্ ।
এত ঝামেলা হয় তাহলে কেন গুগল পিনের চিঠিটি পাঠায়? প্রথমে বলছি কেন গুগল অ্যাডসেন্স থেকে পিনের চিঠি পাঠায়, এরপর আপনার কাছে একটি প্রশ্ন করবো। গুগল অ্যাডসেন্স থেকে পিন পাঠানোর উদ্দেশ্য হলো অ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তির প্রদত্ত তথ্য গুলো সঠিক কিনা তা যাচাই করার জন্য। আপনি ট্যাক্স ইনফরমেশন এ যে তথ্য দিয়েছেন তা সত্য কিনা। এছাড়া আরেকটি কারন হলো – এটা নিশ্চিত করতে যে আসল মালিকের হাতে আয়কৃত চেক পরবে কিনা তা যাচাই করতে। এবার আপনিই বলুন আপনার চেক যদি অন্যের হাতে যায় তাহলে কেমন লাগবে?
অ্যাকউন্ট ভেরিফাই করার জন্য গুগল আপনার বাসার ঠিকানায় ছয় সংখ্যা সম্বলিত পিন পাঠায়। যদি পিন দিয়ে ভেরিফাই করতে না পারেন তাহলে আপনার পেমেন্ট হোল্ড করে রাখা হবে। তাছাড়া ছয় মাসের মধ্যে হোল্ড রিমুভ করতে না পারলে আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে অ্যাড দেখানো বন্ধ করা হবে আর শেষ পর্যন্ত না পারলে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হবে। পিন প্রবেশের সময় পর পর তিন বার পিন ভুল প্রবেশ করালে অ্যাকাউন্ট বাতিল করে দেওয়া হবে। তাই পিন প্রবেশের সময় সাবধানত অবলম্বন করাই শ্রেয়।
বড়ই চিন্তার বিষয়। আপাতত চিন্তা বাদ দিন দেখুন এতে আপনার সমস্যার সমাধান হয় কি না। একটি অ্যাডসেন্স থেকে আপনি মোট তিনটি পিনের চিঠি পেতে পারেন। এর মধ্যে একটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে জেনারেট হয় এবং বাকী দুইটি নিজেকে জেনারেট করতে হয়। প্রথম পিন জেনারেট হবার সম্ভবত তিন সপ্তাহ পর নতুন পিন জেনারেট করার অপশন পাওয়া যায়। এটি পাবেন পিন দেবার পেজেই। এভাবে পরপর তিনটি পিনই জেনারেট করুন। এখন প্রশ্ন হলো তিনটি পিন কি আলাদা আলাদা হবে? না আলাদা হবে না। এর মধ্যে যদি আপনি কোন একটি পিন এর চিঠি হাতে পান তাহলে যেকোন একটি কোড ব্যবহার করলেই চলবে। কারন সব চিঠিতে একি পিনই এক। এবার কথা হলো যদি এগুলোর একটাও না পান তবে কি করবেন। তিনটি পিন জেনারেট হবার পর আপনার অ্যাকাউন্টে বিকল্প ভাবে ভেরিফাই করার অপশন পাবেন। এগুলো হতে পারে জাতীয় পরিচয় পত্র, ইউটিলিটি বিল, ব্যাংক স্টেমেন্ট, ফোন ভেরিফিকেশন ইত্যাদি যেকোন একটি পদ্ধতিতে। যাক অবশেষে পিন সমস্যার উত্তরণের সমাধান পাওয়া গেল। এবার শুধু ধাপ গুলো আসার অপেক্ষা করুন আর নিশ্চিন্তে গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে আয় করুন। সবাই ভাল থাকবেন। আল্লাহ্ আপনাকে সফল করুন। সবাইকে ধন্যবাদ।